ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তাপস বলেন, প্রকৌশলীরা সভ্যতা বিকাশের অংশীজন। একটি জাতি বিনির্মাণে প্রকৌশলীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তুরস্কে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের ক্ষতিগ্রস্তের তথ্যগুলো নজরে আসার জন্য এই সেমিনার। পেশাজীবিদের দায়বদ্ধতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পেশাজীবীদের হালনাগাদ থাকতে হয়৷ চিকিৎসক, আইনজীবীদের কাউন্সিল থাকলে প্রকৌশলীদের কাউন্সিল নেই৷
শনিবার (১১ মার্চ) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)‘র উদ্যোগে 'ভূমিকম্পজনিত দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস: প্রস্ততি ও করণীয়' শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র তাপস এসব কথা বলেন৷
তিনি আরও বলেন, বিএমডিসি কোড থাকলে তা বাস্তবায়ন ও নজরদারি প্রয়োজনীয়। ঘটনা ঘটে গেলে দায়িত্ব কার উপর দিয়ে পার পেয়ে যাবো সেটাই আমরা করি৷ কোন দূর্যোগ ঘটলে সবাই সেখানে ভীড় জমায়। ফায়ার সার্ভিস, র্যাব, সিটি কর্পোরেশন, রেড ক্রিসেন্ট, রাজউক সবাই গিয়ে হাজির হয়। আসলে দূর্যোগের শুরুতে কে কাজ করবে সেটা অনেক দায়িত্বশীলরাও জানে না৷ ভবন নির্মান কোড-১৯৯৩, ২০২০ সালে প্রস্তুত হয়েছে৷ ছোট ছোট দূর্যোগ মোকাবেলা না করতে পারলে তুরস্কের মতোই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হবে।
মেয়র তাপস বলেন, নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়েছে বহুগুণ, ফলে মানুষ মান নিয়ন্ত্রণে অনাগ্রহী হচ্ছে৷ ফলে যেকোন সমস্যায় প্রকৌশলীদেরই সমাধান দিতে হবে৷ সমস্যার গভীরে যেতে হবে। তাহলে ভবিষ্যতে যেকোন দূর্যোগ মোকাবেলা করা যাবে।
আইইবির প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মাে. নূরুল হুদা বলেন, করোনার মতো যেকোন দূর্যোগ মোকাবেলায় প্রকৌশলীরা সবার আগে মাঠে কাজ করেন। প্রকৌশলীরা সরকারের উন্নয়নে অন্যতম কারিগরি ভূমিকা পালন করেন।
আইইবির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ শাহাদাৎ হোসেন শীবলুর স্বাগত বক্তব্যে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জিওটেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ড. ইঞ্জিনিয়ার মেহেদী আহমেদ আনসারি।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, ভূমিকম্পের ঝুঁকি রোধে প্রস্তুতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে নগরের সঠিক পরিকল্পনাই যথেষ্ট। ভবন নির্মাণে সাবধানতা অবলম্বন করলে ভূমিকম্পে ক্ষতি কমানো সম্ভব৷ ভবন নির্মাণে স্থানীয় নগরের নীতিমালা মেনে চলতে হবে৷ এছাড়া সরকারের সকল সংস্থাগুলোর নজরদারি জোর করাও প্রয়োজন। ভবন মালিকেরা সরকারকে সহযোগিতা করলে ভূমিকম্পের ক্ষতি কমানো সম্ভব৷ ভূকম্পের উপর প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নেই৷ ভবনগুলোর মধ্যে অবশ্যই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতাল নির্মাণে ভূকম্পন সহনীয়ভাবে নির্মান করতে হবে। 'দুর্যোগ সহনীয়' এলাকা নির্মাণ করে অন্যদের ও 'মডেল এলাকা' তৈরি করতেও প্রকৌশলীরা সেমিনারে আহবান করেন৷
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন আইইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার এস এম মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, ইঞ্জিনিয়ার মোঃ নুরুজ্জামান, খন্দকার মঞ্জুর মোর্শেদ, সহকারী সাধারণ সম্পাদক রনক আহসান, ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম হাজারী, ঢাকা সেন্টারের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোল্লা মোঃ আবুল হোসেন, সম্পাদক কাজী খায়রুল বাসার, আইইবির পুরকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার মুনাজ আহমেদ নূর, আরবান রিজিলিয়েন্স প্রজেক্ট, ইউএনডিপির পরামর্শক ব্রিগ্রে. জেনা. (অবঃ) ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ খান, রাজউকের আরবান রিজিলিয়েন্স প্রজেক্ট পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল লতিফ হেলালী, ইঞ্জিনিয়ার অমিত কুমার চক্রবর্তী, ইঞ্জিনিয়ার নজরুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার সৌমিত্র কুমার, ইঞ্জিনিয়ার ওয়াহিদ হুদাসহ আইইবির বিভিন্ন বিভাগ, সেন্টারের প্রকৌশলীরা।